Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কে

 

বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি হচ্ছে এ দেশের অন্যতম জাতীয় আয়ের অন্যতম উৎস এবং প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জীবন-জীবিকার অবলম্বন। তাই এ দেশে ভূমি ও পানি সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। ভূমি হচ্ছে মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ যা মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, শিল্পপণ্য, ভোগ বিলাস, স্বাস্থ্য রক্ষার উপকরণ ইত্যাদির মূল উৎস। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ভূমি অপরিকল্পিত ব্যবহারের কারণে আমাদের এ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সাথে নগরায়নের প্রবণতা বাড়ছে, শিল্পায়নের পরিধি ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রমাগত সম্প্রসারণের ফলে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সম্পদের ব্যবহার সঠিক পরিকল্পনার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই একটি যথাযথ সুষ্ঠু পরিকল্পনা, নীতির মাধ্যমে এ প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার তথা সীমিত ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় হতে ভূমি ব্যবহার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যাদি সম্পাদনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। বর্তমানে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপীল বোর্ড, ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) দপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয় এর অধীনে কাজ করছে। বিভাগীয় পর্যায়ে কমিশনার, জেলা পর্যায়ে কালেক্টর (জেলা প্রশাসক), উপজেলা পর্যায়ে সহকারী কমিশনার(ভূমি), ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদারগণ) ভূমি সংক্রান্ত কার্যাদি সম্পাদনে নিয়োজিত রয়েছেন। ভূমি উন্নয়ন কর ও রাজস্ব আদায়, খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত, জলমহাল ব্যবস্থাপনা, ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপকরণ এবং ভূমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাজ করে থাকে। এছাড়াও ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, জনস্বার্থে ভূমি আইন ও বিধি প্রণয়ন ইত্যাদি সংস্কারমূলক কার্যক্রম এবং ভূমিহীন ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ভূমি জোনিং কার্যক্রম, চর ডেলেপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীনদের মধ্যে খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ ও মেরামত, ভূমি রেকর্ড আধুনিকীকরণ তথা জনসাধারণকে স্বল্পতম সময়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রদান ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কার্যাদি ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্পাদিত হয়ে থাকে।

 

ইতিহাস ও কার্যাবলী

ইতিহাস

১৯৫০ সনে, রাষ্ট্রীয়  অধিগ্রহণ এবং প্রজাস্বত্ব আইন পাশের মাধ্যমে জমিদারী প্রথার বিলুপ্তির পর ভূমি রাজস্ব আদায় ও ভূমি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার রাজস্ব বিভাগ (Revenue Department) সৃষ্টি করে। তৎকালীণ রাজস্ব বিভাগকে সহায়তা করার জন্য  প্রাদেশিক সরকারের অধীনে বোর্ড অব রেভিনিউ নামে একটি উচ্চ পর্যায়ের বোর্ড গঠন করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যাদি সম্পাদনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে কমিশনার, জেলা পর্যায়ে কালেক্টর (জেলা প্রশাসক), মহকুমা পর্যায়ে মহকুমা প্রশাসক, থানা পর্যায়ে সার্কেল অফিসার (রাজস্ব) ও ইউনিয়ন পর্যায়ে তহসিলদারগণ ভূমি সংক্রান্ত কাজ করতেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সনে এ মন্ত্রণালয়ের নামকরণ করা হয় ভূমি প্রশাসন এবং ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয়।

১৯৭৫ সনে এই মন্ত্রণালয়ের পুনঃনামকরণ করে রাখা হয় আইন ও সংস্কার মন্ত্রণালয় যার দুইটি বিভাগ ছিল যথাঃ

            (ক) আইন এবং সংসদ বিষয়ক বিভাগ।

            (খ) ভূমি প্রশাসন এবং ভূমি সংস্কার বিভাগ।

       ১৯৭৬ সনে এই মন্ত্রণালয়ের পুনঃনামকরণ করা হয় ভূমি প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সময়ায় মন্ত্রণালয়। ১৯৭৮ সনে পুনরায় পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় ভূমি প্রশাসন এবং ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয়। ১৯৮২ সনে এই মন্ত্রণালয়ের নাম নতুনভাবে রাখা হয়। ভূমি সংস্কার আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ১৯৮৪ সালে পুনরায় এই মন্ত্রণালয়কে নামকরণ করা হয় ভূমি প্রশাসন ও ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে ০১/০৩/১৯৮৭ তারিখে নামকরণ করা হয় ভূমি মন্ত্রণালয়-যা এখনো বলবৎ আছে।

 

কার্যাবলী

১. সরকারের পক্ষে ভূমির অধিকার ও স্বত্ব সংরক্ষণ;

২. ভূমি রাজস্ব নির্ধারণ ও আদায় এবং ভূমি প্রশাসন পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান;

৩. খাস জমি, অর্পিত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা;

৪. ভূমি জরিপ এবং ভূমির নক্সা ও রেকর্ড প্রণয়ন, সংরক্ষণ এবং প্রকাশ;

৫. অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিতকরণ ও সীমানা পিলার মেরামত ও সংরক্ষণ;

৬. সায়রাত মহালের (জলমহাল, বালুমহাল, পাথরমহাল, চিংড়ীমহাল ইত্যাদি) ব্যবস্থাপনা;

৭. ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল সংক্রান্ত কাযক্রম;

৮. ভূমি সংস্কার ও ভূমি ব্যবহার নীতিমালা বাস্তবায়ন।